বেশ কিছুদিন আগে ইন্দ্রিরা রোডের একটা টং দোকানে বসে চা খাচ্ছিলাম। ওই দোকানটা আমার খুউব পছন্দের দোকান।
চাওয়ালা মামার সাথে অনেকটা সখ্যতাও বেড়েছে। রোজ অফিস থেকে ফেরার পথেই দোকানে চা খেতে যাই।
আমি ছোট মানুষ, মনের দিক থেকে না! অর্থনৈতিক দিক থেকে ছোট!
মাথা ঝিমঝিম করলেই কফি খেতে পারিনা। কফি বড়লোকের পানীয়। শরীরটা ঝিমঝিম করলেই তারা কফিশপে যেয়ে ক্যাপাচিনো, এস্প্রেসো, ফ্রেপ্পে ট্রেপ্পে খায়। আমার শরীর ঝিমঝিম করলে আমি যাই টং দোকানে।
"এই মামা, চায়ে চিনি কম দুধ বেশি" এই কথা না বলে চা খাওয়াতে আমি আনন্দ পাইনা, তৃপ্তি পাইনা।
একবার এক কফি শপে যেয়ে বসছিলাম, কফির দাম ২৩০ টাকা। অর্ডারও দিলাম। কিছুক্ষন পর কফি দিয়ে গেলো ওয়েটার। কফিশপ টং এর মতো না, ওখানে পে ফার্স্ট, খাবার লাস্ট।
টং এর ব্যপারটা আলাদা, পরিচিত টং এ চা খেয়ে বলে আসা যায়, ওই মামা টাকা পরে নিও।
তো কফি আসার পর কফি মুখে নিয়ে দেখি একটু তিতা তিতা লাগছে। ওয়েটারকে ডাক দিয়ে বললাম, একটু চিনি দেন তো।
ওয়েটার মুখে মুচকি একটা হাসি দিয়ে বললো "স্যার, এক্সট্রা সুগারের জন্য আগে আপনাকে পে করতে হবে!"
আমি বুঝলাম এসব বড়লোকদের চায়ের দোকানে আমাকে শোভা পাচ্ছেনা। ২৩০ টাকার কফিতে যদি এক্সট্রা সুগারের জন্য এক্সট্রা টাকা দিতে হয়, তাহলে এই কফিশপ আমার উপযুক্ত না।
এক্সট্রা সুগার না নিয়েই হালকা তিতা কফি কিছুটা খেয়ে বের হয়ে আসার সময় ওয়েটার সালাম দিলো। আমি বুঝলাম, এই সালামের মানে হলো "স্যার কিছু টিপস যদি দিতেন", সালামের অন্তর্নিহিত অর্থ বুঝার পরও আমি না বুঝার ভান করে ওয়ালাইকুম সালাম বলে চলে আসলাম।
জগতের সবকিছু সবসময় বুঝতে নেই। সবকিছু বুঝে ফেললে একটা নির্দিষ্ট দেয়ালের মাঝখানে আটকে যেতে হয়। এই পৃথিবীতে যে যতবেশি অবুঝ, ততো বেশি সুখী।
চাওয়ালা মামার সাথে অনেকটা সখ্যতাও বেড়েছে। রোজ অফিস থেকে ফেরার পথেই দোকানে চা খেতে যাই।
আমি ছোট মানুষ, মনের দিক থেকে না! অর্থনৈতিক দিক থেকে ছোট!
মাথা ঝিমঝিম করলেই কফি খেতে পারিনা। কফি বড়লোকের পানীয়। শরীরটা ঝিমঝিম করলেই তারা কফিশপে যেয়ে ক্যাপাচিনো, এস্প্রেসো, ফ্রেপ্পে ট্রেপ্পে খায়। আমার শরীর ঝিমঝিম করলে আমি যাই টং দোকানে।
"এই মামা, চায়ে চিনি কম দুধ বেশি" এই কথা না বলে চা খাওয়াতে আমি আনন্দ পাইনা, তৃপ্তি পাইনা।
একবার এক কফি শপে যেয়ে বসছিলাম, কফির দাম ২৩০ টাকা। অর্ডারও দিলাম। কিছুক্ষন পর কফি দিয়ে গেলো ওয়েটার। কফিশপ টং এর মতো না, ওখানে পে ফার্স্ট, খাবার লাস্ট।
টং এর ব্যপারটা আলাদা, পরিচিত টং এ চা খেয়ে বলে আসা যায়, ওই মামা টাকা পরে নিও।
তো কফি আসার পর কফি মুখে নিয়ে দেখি একটু তিতা তিতা লাগছে। ওয়েটারকে ডাক দিয়ে বললাম, একটু চিনি দেন তো।
ওয়েটার মুখে মুচকি একটা হাসি দিয়ে বললো "স্যার, এক্সট্রা সুগারের জন্য আগে আপনাকে পে করতে হবে!"
আমি বুঝলাম এসব বড়লোকদের চায়ের দোকানে আমাকে শোভা পাচ্ছেনা। ২৩০ টাকার কফিতে যদি এক্সট্রা সুগারের জন্য এক্সট্রা টাকা দিতে হয়, তাহলে এই কফিশপ আমার উপযুক্ত না।
এক্সট্রা সুগার না নিয়েই হালকা তিতা কফি কিছুটা খেয়ে বের হয়ে আসার সময় ওয়েটার সালাম দিলো। আমি বুঝলাম, এই সালামের মানে হলো "স্যার কিছু টিপস যদি দিতেন", সালামের অন্তর্নিহিত অর্থ বুঝার পরও আমি না বুঝার ভান করে ওয়ালাইকুম সালাম বলে চলে আসলাম।
জগতের সবকিছু সবসময় বুঝতে নেই। সবকিছু বুঝে ফেললে একটা নির্দিষ্ট দেয়ালের মাঝখানে আটকে যেতে হয়। এই পৃথিবীতে যে যতবেশি অবুঝ, ততো বেশি সুখী।
টং দোকানে চা খাওয়ার সময় একদিন একটা বাচ্চার সাথে দেখা হলো। পরনে কোন জামা নেই। একটা ময়লা জিন্সের প্যান্ট পরে আছে। প্যান্টে বেল্ট না থাকায়, বারবার প্যান্টটা নিচে নেমে যাচ্ছে। ছেলেটা প্রতি মিনিটে চার পাঁচবার সেই প্যান্ট টেনে উপরে তুলছে। আমার বয়স বেশি না হলেও, মনের দিক থেকে আমার আচরনের পরিপক্কতা মাঝে মাঝে বয়সের দ্বিগুণ হয়ে যায়। রাস্তা ঘাটে ময়লা টয়লা ঘেটে আসা শিশু দেখলে আমি বাবা বলে ডাক দিই।
বিয়ে টিয়ে না করলেও মাঝে মাঝে নিজের ভেতর পিতৃশুলভ একটা মমতা উপলব্ধি করি। বাবারা যেমন অগোছালো সন্তানকে বকাঝকা করে, আমার ওসব পথশিশুর প্রতি সেরকম আচরন করতে ইচ্ছে হয়। বলতে ইচ্ছে হয়, "কিরে বাবা, চুল কাটিসনা কেন?"
কখনো কখনো বলি, কখনো বলিনা। তারপর সেই বাচ্চাটাকে ডেকে বললাম "তুমি এরকম খালি গায়ে এখানে দাঁড়িয়ে আছো কেন, বাবা?"
ছেলেটা জবাব দিল - আমি তো এইহানেই থাকি, এইহানেই ঘুমাই।
আমি বললাম - বাসা কোথায় তোমার?
সে জবাব দিলো- বাসা নাই আমাগো। রাস্তায়ই ঘুমাই।
আমি আবার প্রশ্ন করলাম- মা বাবা কোথায় থাকে?
আমার এসব প্রশ্নে সে কিছুটা বিরক্তি নিয়েই বললো - আমাগো মা বাপ নাই। কই থাহে জানিনা। কোনদিন দেহি নাই। এক দাদীর কাছে বড় হইছি। অহন, দাদীই মা।
আমি বললাম- দাদী কই থাকে?
সে জবাব দিলো- আমাগো লগেই রাস্তায় ঘুমায়।
আমি দোকানদার মামারে বললাম অরে একটা চা দেন। দোকানি ওরে চা দিলো, আমি বিলটা দিয়ে ওখান থেকে চলে আসলাম।
বিয়ে টিয়ে না করলেও মাঝে মাঝে নিজের ভেতর পিতৃশুলভ একটা মমতা উপলব্ধি করি। বাবারা যেমন অগোছালো সন্তানকে বকাঝকা করে, আমার ওসব পথশিশুর প্রতি সেরকম আচরন করতে ইচ্ছে হয়। বলতে ইচ্ছে হয়, "কিরে বাবা, চুল কাটিসনা কেন?"
কখনো কখনো বলি, কখনো বলিনা। তারপর সেই বাচ্চাটাকে ডেকে বললাম "তুমি এরকম খালি গায়ে এখানে দাঁড়িয়ে আছো কেন, বাবা?"
ছেলেটা জবাব দিল - আমি তো এইহানেই থাকি, এইহানেই ঘুমাই।
আমি বললাম - বাসা কোথায় তোমার?
সে জবাব দিলো- বাসা নাই আমাগো। রাস্তায়ই ঘুমাই।
আমি আবার প্রশ্ন করলাম- মা বাবা কোথায় থাকে?
আমার এসব প্রশ্নে সে কিছুটা বিরক্তি নিয়েই বললো - আমাগো মা বাপ নাই। কই থাহে জানিনা। কোনদিন দেহি নাই। এক দাদীর কাছে বড় হইছি। অহন, দাদীই মা।
আমি বললাম- দাদী কই থাকে?
সে জবাব দিলো- আমাগো লগেই রাস্তায় ঘুমায়।
আমি দোকানদার মামারে বললাম অরে একটা চা দেন। দোকানি ওরে চা দিলো, আমি বিলটা দিয়ে ওখান থেকে চলে আসলাম।
তার দুইদিন পর ভ্যালেন্টাইন ডে, বাংলায় যাকে ভালোবাসা দিবস বলে। এসব নির্দিষ্ট দিনে আমি সবসময় সবার চেয়ে আলাদা থাকার চেষ্টা করি। তখন আমার তেমন কেউ ছিলো না যে, তাকে নিয়ে ঘুরতে বের হতে হবে। যখন তেমন কেউ ছিলো, তখনও আমি এসব দিনে বাইরে বের হতাম না। অনেকে বলে, ভালোবাসা প্রকাশের একটা নির্দিষ্ট দিন থাকাতে তেমন কোন অন্যায় তো দেখিনা। আমিও এটাকে কখনো অন্যায় মনে করিনা।
তবে আমার ভালোবাসার ডেফিনেশনটা আলাদা। আমি ভাবি, মানুষকে ভালোবাসার কোন দিন তারিখ মাস থাকার প্রয়োজন নেই।
ভালোবাসা রাত দুটো বাজে হুট করে ঘুম ভেঙে যাওয়া বুকের ধুকপুকানিতে কারো শূন্যতা অনুভব করার মাঝেও থাকে।
সারা বছর বউরে পিটাইয়া, ভালোবাসা দিবসে গোলাপ নিয়ে ঘরে ফিরলেই তাকে ভালোবাসা বলা যায়না। এই দৃষ্টিকোন থেকে আমি এসব দিনে কখনো বের হইনা। ঘরে থাকি, একা থাকি, বইটই পড়ি, সিনেমা দেখি। সব মানুষ যে জিনিস করে, তার বাইরে চিন্তা করতে পারলেই জীবনের স্বাদটা ভিন্ন হয়।
তবে আমার ভালোবাসার ডেফিনেশনটা আলাদা। আমি ভাবি, মানুষকে ভালোবাসার কোন দিন তারিখ মাস থাকার প্রয়োজন নেই।
ভালোবাসা রাত দুটো বাজে হুট করে ঘুম ভেঙে যাওয়া বুকের ধুকপুকানিতে কারো শূন্যতা অনুভব করার মাঝেও থাকে।
সারা বছর বউরে পিটাইয়া, ভালোবাসা দিবসে গোলাপ নিয়ে ঘরে ফিরলেই তাকে ভালোবাসা বলা যায়না। এই দৃষ্টিকোন থেকে আমি এসব দিনে কখনো বের হইনা। ঘরে থাকি, একা থাকি, বইটই পড়ি, সিনেমা দেখি। সব মানুষ যে জিনিস করে, তার বাইরে চিন্তা করতে পারলেই জীবনের স্বাদটা ভিন্ন হয়।
ভালোবাসা দিবসের দিন সন্ধ্যায় অফিস শেষ করে আমি ধানমন্ডিতে গেলাম। রবীন্দ্র সরোবরে যেয়ে দেখি, হাজার হাজার কাপল একে অন্যের হাত ধরে বসে আছে। এমন শক্ত করে প্রেমিক তার প্রেমিকার হাত ধরে বসে আছে যে, হাত ছাড়লেই বোধয় আমি তার প্রেমিকাকে নিয়ে দৌড়ে পালায় যাবো।
ভালোবাসা আছে, ভয়ও আছে। মানুষ কাছে পাওয়ার জন্য যাকে ভালোবাসে, তার দূরে যাওয়ার চিন্তাটাই তাকে ভালো থাকতে দেয়না।
আমি কাউকে ভালোবাসার বেলায় প্রচন্ড দাতা স্বভাবের। যখন ভালোবাসবো, তখন কার্পণ্য করবো না। থাকবে কি থাকবেনা, এই সন্দেহ নিয়ে ভালোবাসা বিনিয়োগ করা যায়না।
এটা একটা নন প্রফিট বিজনেসের মতো। বিনিয়োগ করতে হবে, লাভ আসলে ভালো, না আসলে নাই। মানুষকে ভালোবাসতে হয় একদম নিঃশর্তে। চলে গেলে যাবে, থাকলে থাকবে।
লেনদেনের হিসেব মিলিয়ে সম্পর্কে গেলেই, জটিলতার পর জটিলতা আসে।
যাইহোক, সেদিন রবীন্দ্র সরোবরে যেয়ে আমি পথশিশু খুঁজতে লাগলাম। একটা একটা করে ধরে ধরে ৭ জনকে একসাথে করলাম।
ওইখানে কয়েকটা কাবাবের দোকান আছে। ওসব ভালোবাসা টালোবাসা দিবসে ওখানে প্রেমিক প্রেমিকাদের ভিড় থাকে অনেক। আমি মাঝে মাঝে কনফিউসড হয়ে যাই যে, তারা কি মূলত একজন অন্যজনকে চোখ ভরে দেখতে এসেছে নাকি খেতে এসেছে।
সে যাইহোক না কেন, ওসব আমার বিষয় না। আমি কয়েকটা বাচ্চা নিয়ে কাবাব খেতে বসেছি। ওসব বাচ্চাদের সাধারনত দোকানদাররা কাছে আসতে দেয়না। আমি সাথে থাকাতে না ও করতে পারছেনা। আমরা চেয়ারে বসে থাকার সময়ে খেয়াল করলাম, আমাদের পাশের টেবিলে স্বামী স্ত্রী তাদের সন্তানকে নিয়ে খেতে বসছে। একটা খালি গায়ের শিশু সেখানে যেয়ে খাবারের জন্য হাত পেতে আছে। মহিলা ভ্রূ কুচকে শিশুটাকে তাড়িয়ে দিলো। আমি ওই শিশুকে ডেকে এনে আমার টেবিলে বসালাম।
এরপর মহিলা ভ্রূ কুচকে আমার দিকে তার সেই জাকালা টাইপ লুক দিলো। আমি ওসবকে কেয়ার না করে বাচ্চাদের সাথে আড্ডা দিলাম। খাবার চলে আসছে। প্রতিটা শিশুর সামনে একটা করে চিকেন চাপ আর লুচি; সাথে আছে আসেপাশের শত শত মানুষের চোখ।
সবাই খাওয়া থামিয়ে তাদের দিকে দেখছিলো। তাদের চোখে মুখে অপরাধবোধ। আমি এটাই চাচ্ছিলাম, সবাই একটা ধাক্কা খাক।
কেউ কেউ আমার দিকে তাকিয়ে ইশারায় এপ্রিশিয়েট করছিলো।
খাওয়া শেষে বাচ্চারা বললো- ভাইয়া কি ভালো চাকরি পাইছেন?
আমি বললাম- না বাবা। চাকরি আমি আগে থেকেই করি।
তারা সবাই একসাথে হাত ধরে আমার চারিপাশে দাঁড়ায় আছে।
একজন আমার চুল টেনে আদর করে দিচ্ছে। ওদের চোখে মুখে বিস্ময়!
আমি সেদিন এই ভালোবাসায় যেই তৃপ্তি পেয়েছি, তা আর কোন ভালোবাসায় পাইনি কখনো।
ভালোবাসা মানে, ভালোবাসা! ভালোবাসার কোন নির্দিষ্ট নিয়ম কানুন নেই।
ভালোবাসা আছে, ভয়ও আছে। মানুষ কাছে পাওয়ার জন্য যাকে ভালোবাসে, তার দূরে যাওয়ার চিন্তাটাই তাকে ভালো থাকতে দেয়না।
আমি কাউকে ভালোবাসার বেলায় প্রচন্ড দাতা স্বভাবের। যখন ভালোবাসবো, তখন কার্পণ্য করবো না। থাকবে কি থাকবেনা, এই সন্দেহ নিয়ে ভালোবাসা বিনিয়োগ করা যায়না।
এটা একটা নন প্রফিট বিজনেসের মতো। বিনিয়োগ করতে হবে, লাভ আসলে ভালো, না আসলে নাই। মানুষকে ভালোবাসতে হয় একদম নিঃশর্তে। চলে গেলে যাবে, থাকলে থাকবে।
লেনদেনের হিসেব মিলিয়ে সম্পর্কে গেলেই, জটিলতার পর জটিলতা আসে।
যাইহোক, সেদিন রবীন্দ্র সরোবরে যেয়ে আমি পথশিশু খুঁজতে লাগলাম। একটা একটা করে ধরে ধরে ৭ জনকে একসাথে করলাম।
ওইখানে কয়েকটা কাবাবের দোকান আছে। ওসব ভালোবাসা টালোবাসা দিবসে ওখানে প্রেমিক প্রেমিকাদের ভিড় থাকে অনেক। আমি মাঝে মাঝে কনফিউসড হয়ে যাই যে, তারা কি মূলত একজন অন্যজনকে চোখ ভরে দেখতে এসেছে নাকি খেতে এসেছে।
সে যাইহোক না কেন, ওসব আমার বিষয় না। আমি কয়েকটা বাচ্চা নিয়ে কাবাব খেতে বসেছি। ওসব বাচ্চাদের সাধারনত দোকানদাররা কাছে আসতে দেয়না। আমি সাথে থাকাতে না ও করতে পারছেনা। আমরা চেয়ারে বসে থাকার সময়ে খেয়াল করলাম, আমাদের পাশের টেবিলে স্বামী স্ত্রী তাদের সন্তানকে নিয়ে খেতে বসছে। একটা খালি গায়ের শিশু সেখানে যেয়ে খাবারের জন্য হাত পেতে আছে। মহিলা ভ্রূ কুচকে শিশুটাকে তাড়িয়ে দিলো। আমি ওই শিশুকে ডেকে এনে আমার টেবিলে বসালাম।
এরপর মহিলা ভ্রূ কুচকে আমার দিকে তার সেই জাকালা টাইপ লুক দিলো। আমি ওসবকে কেয়ার না করে বাচ্চাদের সাথে আড্ডা দিলাম। খাবার চলে আসছে। প্রতিটা শিশুর সামনে একটা করে চিকেন চাপ আর লুচি; সাথে আছে আসেপাশের শত শত মানুষের চোখ।
সবাই খাওয়া থামিয়ে তাদের দিকে দেখছিলো। তাদের চোখে মুখে অপরাধবোধ। আমি এটাই চাচ্ছিলাম, সবাই একটা ধাক্কা খাক।
কেউ কেউ আমার দিকে তাকিয়ে ইশারায় এপ্রিশিয়েট করছিলো।
খাওয়া শেষে বাচ্চারা বললো- ভাইয়া কি ভালো চাকরি পাইছেন?
আমি বললাম- না বাবা। চাকরি আমি আগে থেকেই করি।
তারা সবাই একসাথে হাত ধরে আমার চারিপাশে দাঁড়ায় আছে।
একজন আমার চুল টেনে আদর করে দিচ্ছে। ওদের চোখে মুখে বিস্ময়!
আমি সেদিন এই ভালোবাসায় যেই তৃপ্তি পেয়েছি, তা আর কোন ভালোবাসায় পাইনি কখনো।
ভালোবাসা মানে, ভালোবাসা! ভালোবাসার কোন নির্দিষ্ট নিয়ম কানুন নেই।
আমার সবচেয়ে বড় সীমাবদ্ধতা হলো, আমি একটা কিছু নিয়ে লিখতে লিখতে আরেকটা কিছুতে ঢুকে যাই।
তবুও লিখি। চিন্তায় যেহেতু কিছু একটা আসে, সেহেতু তাকে কিবোর্ডে টাইপ করতে আমার কতটুকুই বা কষ্ট হয়!
আমি লিখি নিজের জন্য। লিখতে ভালো লাগে বলে লিখি। কেউ পড়বে, কেউ পড়বেনা, তাতে আমার কি!
তবুও লিখি। চিন্তায় যেহেতু কিছু একটা আসে, সেহেতু তাকে কিবোর্ডে টাইপ করতে আমার কতটুকুই বা কষ্ট হয়!
আমি লিখি নিজের জন্য। লিখতে ভালো লাগে বলে লিখি। কেউ পড়বে, কেউ পড়বেনা, তাতে আমার কি!
আমি ঘরহীন মানুষের কথা লিখতে চেয়েছিলাম। লিখতে চেয়েছিলাম, মানুষের হৃদপিন্ডটা একটা উঠানের মতন। সেখানে প্রতিটা কাছের মানুষ একেকটা ঘর।
এই ঘরের খুটিতে থাকে যত্ন। মেঝেতে ছড়ানো থাকে প্রেম, ভালোবাসা আর অসংখ্য স্বপ্ন।
আমি বলতে চেয়েছিলাম হৃদপিন্ডের আঙিনায় ঘরহীন হয়ে থাকা মানুষের দুঃখের কথা।
এই ঘরের খুটিতে থাকে যত্ন। মেঝেতে ছড়ানো থাকে প্রেম, ভালোবাসা আর অসংখ্য স্বপ্ন।
আমি বলতে চেয়েছিলাম হৃদপিন্ডের আঙিনায় ঘরহীন হয়ে থাকা মানুষের দুঃখের কথা।
যে মানুষের কোন ঘর নেই, একটা আশ্রয় নেই, কোন কাছের মানুষ নেই! যে মানুষ রাত হলে একা থাকে, নিঃসঙ্গতা যাকে গ্রাস করে রাখে প্রতিনিয়ত, আমি তাদের কথা লিখতে গিয়েও থেমে গেছি সত্যিকার ঘরহীন, আশ্রয়হীন মানুষের গল্পের কাছে।
পৃথিবীটা কঠিন হয়ে যায় একটা ব্যক্তিগত মানুষহীনতায়! জীবন কি তারচেয়ে বেশি কঠিন হয়না, একটা দৃশ্যমান ছাদহীনতায়?
সমস্ত আকাশটাকেই যারা ছাদ বানিয়ে বসে আছে, আমাদের নির্দিষ্ট মানুষহীনতার শূন্যতা কি তারচেয়েও বেশি?
সমস্ত আকাশটাকেই যারা ছাদ বানিয়ে বসে আছে, আমাদের নির্দিষ্ট মানুষহীনতার শূন্যতা কি তারচেয়েও বেশি?
মাঝে মাঝে মনে হয়, কিসের এত বুক ব্যথা! বেশ ভালোই তো আছি!
অন্তত দিনশেষে ঘরে ফিরতে পারছি। ভালোবাসার বুক না হোক, একটা বালিশ তো জুটেছে!
এসবই কি পেমেন্টহীন এক্সট্রা সুগারের মতন না?
অন্তত দিনশেষে ঘরে ফিরতে পারছি। ভালোবাসার বুক না হোক, একটা বালিশ তো জুটেছে!
এসবই কি পেমেন্টহীন এক্সট্রা সুগারের মতন না?
ভালো নেই ভাবতে ভাবতেই মনে হয়, বেশ দিব্যিই তো আছি! অন্তত শৈশবে কেউ তো পথশিশু বলে ডাকেনি! ভ্রূ কুচকে তাকায়নি। রাস্তায় ঘুমাতে হয়নি। খাবারের জন্য দুঃশ্চিন্তা করা লাগেনি।
তবুও আমরা কত আফসোস করে বলি "why always me? আমিই কেন? আমার সাথেই কেন এমন হয়?"
তবুও আমরা কত আফসোস করে বলি "why always me? আমিই কেন? আমার সাথেই কেন এমন হয়?"
আহারে আমাদের বিলাসবহুল হতাশা!
বলার ভাষা নাই৷ প্রতিদিন রাতরে আপনার সব গুলি লিখা পড়তে চেষ্টা করি৷ আপনার লেখা গুলি পড়লে কি যে মনে তৃপ্তি আসে৷ মন খারাপ লাগলে আপনার লেখা পড়তে চলে আসি৷নিজেকে অনেক স্ট্রং মনে হয়!
ReplyDeleteসব গুলি পইড়া লাইছি, নতুন কি কোনও কিছু আসবেনা????