এরপর একদিন হুট করে পৃথিবী বদলে যাবে!
বদলে যাবে নবম শ্রেনীর সাধারন বিজ্ঞানে থাকা হোমো-সেপিয়েন্সের ডেফিনেশন!
সৃষ্টিজগৎ বুঝে যাবে, চোখ কান মাথা এবং দুটো পা নিয়ে খাঁড়া হয়ে হেটে যাওয়া সকল প্রানীই মানুষ নয়!
বিবর্তন আসবে!
পৃথিবী বদলে যাবে! বদলে যাবে "মানুষ কাকে বলে" প্রশ্নের উত্তর!
একদিন সবকিছু বদলে যাবে!
পাঠ্য বইয়ের পৃষ্ঠার বাইরে এসে মানুষ পৃথিবীকে কল্পনা করতে শিখে যাবে!
"কেমন আছো" প্রশ্নের উত্তর যে সবসময় "ফাইন" হয়না, এটা ঢুকে যাবে অভ্যাসে!
ওসব ষষ্ঠ শ্রেনীর ইংলিশ ফর টুডে বইয়ের ডায়লগ লিখতে যেয়ে ছোট ছেলে-মেয়েরা লিখে দিবে "ভালো নেই! আমার জ্বর!"
একদিন হুট করে সব অভ্যাস হয়ে যাবে!
উন্মুক্ত ময়দানে চুমু খেয়ে কেউ ভয়ে লজ্জায় মাথা লুকাবেনা!
মানুষের চিন্তার জগৎ প্রসারিত হবে! সীমাবদ্ধতার দেয়াল টপকে স্বাধীন হবে নিষিদ্ধ যত যা কিছু আছে!
পৃথিবী বদলেছে বহুবার!
নগ্ন হয়ে জন্ম নিয়ে নগ্ন হয়েই মরেছিল যে মানুষ, সে মানুষও একসময় পোষাকের সভ্যতায় এসেছে!
সভ্যতার সৃষ্টি হয় বিবর্তনে!
পৃথিবী বদলাতে বাধ্য!
বদলাতে বাধ্য বিশ্বাস অবিশ্বাসের কোমল অনুভূতি!
বিশ্বাস নয় বিশ্লেষনই কেবল সত্যি!
ভালোবাসা বাসির এই যুগে মানুষ হারালে মানুষ ব্যথা পায়!
অথচ,হারিয়ে যাওয়াই নিয়ম! কারো কারো রয়ে যাওয়াটা কেবল অতিরিক্ত সুবিধা অর্জন!
আজকে যে ছেলে অল্প দিনের পরিচয়ে কাউকে কাছে টেনে নিয়ে ব্যথায় কাতর হয়,
একদিন কারো জন্য তারও ব্যথা হবেনা!
মানুষের ঘুম পেলে ঘুমাবে! খেতে ইচ্ছে হলে খাবে! বাঁচতে ইচ্ছে হলে বাঁচবে!
এমনকি মানুষ মৃত্যুর স্বাধীনতাকেও নিজের করে নিবে!
শত বছর, হাজার বছর কিংবা এক কোটি বছর পর পৃথিবী বদলে যাবে!
হৃদপিন্ডের আদান-প্রদান হয়ে যাবে মিথ!
সেই প্রজন্মের ডিজনি সিরিয়ালের শুরুতে দেখানো হবে, কয়েক কোটি বছর আগে মানুষ মানুষকে ভালোবাসতো!
ছোট্ট শিশু কান্না থামিয়ে জিজ্ঞেস করবে "মা, ভালোবাসা কি?"
পৃথিবী বদলাবে একদিন!
যেমন করে বদলে যায় মানুষের মন!
ক্ষত হয়ে যাওয়া হৃদপিন্ড!
আবছা হয়ে যাওয়া পুরাতন স্মৃতি!
সময় সবকিছু বদলে দেয়! নাহ, প্রয়োজন বদলে দেয় সব!
মানুষ সচেতন হবে!
অস্তিত্বহীন বিশ্বাসে মানুষ হাসতে হাসতে বলে দিবে, "তোমার মন খারাপ'' কই আমি দেখতে পাইনা তো!
আজ থেকে এক কোটি বছর আগের পৃথিবী বদলেছে!
এক কোটি বছর পরের পৃথিবীও বদলাবে!
তুমি আমি থাকবো না; মাটিতে মিশে গেলে পৃথিবী সেই ভূমিতে চৌম্বকিয় পথ তৈরী করে দিবে!
আমাদের শরীর পচে যাওয়া মাটির উপর দিয়ে উড়ে যাবে ভাসমান মালবাহী ট্রাক!
এসব মায়া মোহ মুগ্ধতার দেয়াল টপকে মানুষ বেরিয়ে যাবে মহাকাশের পথে!
বুকের ভেতরের মাংসল হৃদপিন্ড ফেলে দিয়ে সেখানে ইঞ্জিন বসানো হবে!
সে ইঞ্জিনে কোন কোমলমতি যুবতীর মুখ ভেসে উঠবেনা!
কারো হাত ধরে সমস্ত জীবন কাটিয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতির দায়বদ্ধতা থাকবেনা!
মানুষ মানুষের পাশ দিয়ে হেটে গেলে বলবেনা, " এ্যাই অনিল, কেমন আছিস রে? অনেকদিন পর দেখা হলো!"
সবাই যার যার নিজের মতো বাঁচতে শিখে যাবে!
বহুদিন পর দেখা হলে, কারো কিছু যায় আসেনা!
আচ্ছা,
বুকের ভেতর ইঞ্জিনের হৃদপিন্ড বসানো ১৬ বছরের মেয়েটা কি রোজ রোজ ঘর ফাঁকা হলে শাড়ি পড়বে? কপালে টিপ দিবে?
কোথাও যাবেনা, তবুও চোখে কাজল লেপ্টে কারো কথা মনে করে, কাঁদতে কাঁদতে চোখ দুটো জলপ্রপাত বানিয়ে ফেলবে?
নাকি ইঞ্জিনের মানুষেরা কখনো তীব্র শূন্যতায় কান্না করেনা?
পৃথিবী হয়তো একদিন বদলাবে!
আমাদের কল্পনার মতো করে না বদলাক,তবুও বদলে যাবে অনেক কিছুই!
বদলে যাওয়াই যেখানে নিয়ম, সেখানে বদলানো বাধ্যতামূলক!
এই বদলে যাওয়ার নিয়মকে বিশ্বাস করেই আমি এই সভ্যতা এবং প্রজন্মের মানুষের বদলে যাওয়াতে মন খারাপ করিনা!
কত মানুষ রোজ সকালে কাছে এসে, সন্ধ্যায় বদলে গেলো!
এটা বোধয় অনুভূতির বিবর্তন!
~~~~~~~~~~~
বিবর্তন!

Comments

Popular posts from this blog