- এভাবে সমুদ্র দেখতে এসে দেখা হয়ে যাবে ভাবিনি!
যে মানুষ সবসময় লুকিয়ে বেরায়, তার সাথে হুট করে দেখা হয়ে গেলে ঠিক কি করা উচিত, আমি জানি না!
এত বছর পর তোমাকে দেখবো, নিজেরই বিশ্বাস হয়নি!
যে মানুষ সবসময় লুকিয়ে বেরায়, তার সাথে হুট করে দেখা হয়ে গেলে ঠিক কি করা উচিত, আমি জানি না!
এত বছর পর তোমাকে দেখবো, নিজেরই বিশ্বাস হয়নি!
- আমিও ভাবিনি, এভাবে দেখা হবে আমাদের! কেমন আছো?
- হুম বেশ ভালো! দিব্যি আনন্দে কাটছে জীবন! তুমি?
- হুম, আমিও ভালো আছি! সংসার করছি! একটা সন্তান আছে!
- ছেলে নাকি মেয়ে?
- মেয়ে! নাম প্রিয়ন্তি! খুব মিষ্টি হয়েছে, জানো!
- প্রিয়ন্তি কোথায়?
- ওর বাবার হাত ধরে ওদিকটায় হাটছে বোধয়!
- তুমি সাথে গেলে না?
- নাহ, আমি সমুদ্র দেখতে দাঁড়িয়েছি! সন্ধ্যার সমুদ্রটা কেমন সুন্দর দেখেছো? ঢেউ আছড়ে পরছে সমুদ্র পাড়ে! কেমন একটা ভাংচূর ভাংচূর শব্দ হয়!
- সমুদ্র তো তুমি পছন্দ করতে না! তোমার ভালো লাগতো পাহাড়!
- সমুদ্র আমার মন খারাপ করে দেয়! এই যে এখন কেমন বিষন্ন লাগছে! বুকের ভেতরটা ফাঁকা ফাঁকা বোধ হয়!
তুমি একাই এসেছো?
তুমি একাই এসেছো?
- হুম, একাই!
- তোমার স্ত্রীকে নিয়ে আসলেই পারতে!
- নাহ! নিজেকে খুজতে এসেছি! নিজেকে সময় দিচ্ছি! কেউ সাথে থাকলে, নিজেকে খুজে পাওয়া যায়না!
- একা থাকতে ভালো লাগে?
- কেউ পাশে থাকলেও কি ভালো লাগে খুব?
- এই যে আমি পাশে আছি, বিরক্ত হচ্ছো?
- এ জায়গাটায় আমি প্রতিবছর আসি! এবং এই তারিখেই আসি!
- এই তারিখেই কেন?
- এই দিনটাতে কাউকে ভালো লাগে না! সবকিছু থেকে দূরে থাকতে ইচ্ছে হয়!
- কেন?
- এই দিনেই বোধয় তোমার বিয়ে হয়েছিলো! এই দিন থেকেই তোমার সাথে আমার যোগাযোগ হয়নি আর!
তোমার হাতে লাল রংয়ের মেহেদি, আমার বুকের ভেতর ক্ষত!
তোমার নতুন জীবন! আমার পুরাতনে আটকে যাওয়া!
তোমার ভবিষ্যত আর আমার স্মৃতি গুনে বেঁচে থাকা!
তোমার হাতে লাল রংয়ের মেহেদি, আমার বুকের ভেতর ক্ষত!
তোমার নতুন জীবন! আমার পুরাতনে আটকে যাওয়া!
তোমার ভবিষ্যত আর আমার স্মৃতি গুনে বেঁচে থাকা!
- সিগারেটটা এখন না জ্বালালে হয়না?
- হুম, হয়! একসময় তোমার সামনে সিগারেট জ্বালালে তুমি কি ভীষন রেগে যেতে! আজ এত নিরব কেন?
- অধিকার হারিয়ে ফেলার পর কি করে আবার অধিকার দেখাই!
রাগ করতেও ভীষন অধিকার লাগে! অধিকারের সাথে ভালোবাসাও থাকতে হয়!
রাগ করতেও ভীষন অধিকার লাগে! অধিকারের সাথে ভালোবাসাও থাকতে হয়!
- ভালোবাসা নেই এখন?
- কি জানি, আছে হয়তো! অধিকারটাই নেই শুধু!
- নীল রংয়ের শাড়ি! কপালে টিপ! চোখে কাজল! হাতে নীল চুড়ি!
এভাবেই পাশাপাশি হাতে হাত রেখে সমুদ্র দেখার কথা ছিল!
এভাবেই পাশাপাশি হাতে হাত রেখে সমুদ্র দেখার কথা ছিল!
- দেখছিই তো! দ্যাখো, কি সুন্দর করে সেঁজে এসেছি! যেমনটা তুমি চাইতে একসময়!
- সবই ঠিক আছে! একসাথে সমুদ্রও দেখছি দুজন! শুধু এখন আর হাত ধরা যায়না!
তোমাকে স্পর্শ করার অধিকার নেই! কত কোটি বছর হয়, তোমাকে ছুয়ে দেখি না!
তোমাকে স্পর্শ করার অধিকার নেই! কত কোটি বছর হয়, তোমাকে ছুয়ে দেখি না!
- বাদ দাও না, অনীল! এসব ভেবে এখন আর কোন লাভ নেই!
- হুম জানি! অনেক বদলে গেছো তুমি!
- মেয়েদের বদলে যেতে হয়! প্রতি মুহূর্তে বদলে যেতে হয়!
মা-বাবার কথায় বদলে যেতে হয়! সমাজের নিয়মে বদলে যেতে হয়! সন্তানের জন্য বদলে যেতে হয়!
বদলাতে হয়, একটা বৈধ কাগজে স্বাক্ষর করে ফেললে!
কেন এসেছো তুমি আজ?
কেন আবার নতুন করে, আমাকে এমন একটা অবস্থায় ফেলে দিচ্ছো?
মা-বাবার কথায় বদলে যেতে হয়! সমাজের নিয়মে বদলে যেতে হয়! সন্তানের জন্য বদলে যেতে হয়!
বদলাতে হয়, একটা বৈধ কাগজে স্বাক্ষর করে ফেললে!
কেন এসেছো তুমি আজ?
কেন আবার নতুন করে, আমাকে এমন একটা অবস্থায় ফেলে দিচ্ছো?
- তুমি এখানে আসবে জানলে, আমি কখনোই আসতাম না, নীলা!
- এত'টা ঘৃণা বুকে জমিয়ে রেখেছো?
- যদি বলি, এটাই প্রেম!
- মেনে নিবো!
- এখনো মেনে নেওয়ার অভ্যাস যায়নি তোমার?
- চলে গেছে! কোন কিছুই আজকাল মেনে নিতে পারিনা!
- এই যে এখন মেনে নিলে!
- তোমার কাছে হেরে যেতেও ভালো লাগে, তাই হেরে যাই!
- তোমার অবাধ্য চুলগুলো বেঁধে রাখো! বাতাসে উড়ছে খুব!
- ভালো লাগছেনা?
- বুকের জমে যাওয়া ক্ষতটাতে ব্যাথা অনুভব হয়!
- বদলাওনি তুমি এখনো!
- ভালোবাসলে, বদলে যাওয়া যায়?
- যায় হয়তো! এই যে আমি বদলে গেছি!
- ঠিক কতটুকু বদলেছো?
- যতটুকু বদলে গেলে, মানুষ ম্যাচিউর হয়ে যায়!
- সংসার কেমন চলছে?
- রোজ রান্না করছি! একসাথে ভাত খাচ্ছি! সে অফিস থেকে ফিরলে, দরজা খুলে দিচ্ছি! জামা-কাপর আয়রন করে দিচ্ছি!
সন্তানের যত্ন নিচ্ছি! সবই তো ঠিকঠাক করছি! সংসারটাও বোধয় ঠিকই চলছে!
তোমার সংসারের কথা তো কিছুই বললে না!
সন্তানের যত্ন নিচ্ছি! সবই তো ঠিকঠাক করছি! সংসারটাও বোধয় ঠিকই চলছে!
তোমার সংসারের কথা তো কিছুই বললে না!
- রোজ অফিস থেকে ঘরে ফিরছি! টেবিলে খাবার সাজানো পাচ্ছি! সকালে আয়রন করা জামা পরে বাইরে যাচ্ছি!
রাতে ঠিকঠাক স্ত্রীর কাছে যাচ্ছি! একই ঘরে ঘুরাঘুরি করছি!
একটা সন্তানের জন্য অপেক্ষা করছি!
রাতে ঠিকঠাক স্ত্রীর কাছে যাচ্ছি! একই ঘরে ঘুরাঘুরি করছি!
একটা সন্তানের জন্য অপেক্ষা করছি!
- ৪ জন মানুষ ঠকে চলেছে, তাই না?
- হয়তো!
- চা খাবে?
- খাওয়া যায়!
- আচ্ছা, অর্ডার করছি!
- নাহ থাক! ওই যে অনিমেষ আর প্রিয়ন্তি চলে এসেছে!
আমি যাচ্ছি!
আমি যাচ্ছি!
- হুম, যাও! নিজের যত্ন নিও!
- হুম নিবো! সিগারেটটা কম খেও একটু!
- হুম!
নীলা চলে গেলো! আমি একটা সিগারেট জ্বালালাম! সমুদ্রের বাতাসের তীব্রতা বেড়ে চলেছে!
নীলার অবাধ্য চুল উড়ে চলেছে অজানার পথে! শাড়ির আঁচল মাটি স্পর্শ করে এগিয়ে যাচ্ছে!
অনিমেষের হাতে নীলার একটা হাত, আরেকটা হাত প্রিয়ন্তির হাতে!
আমি নীলার চলে যাওয়া দেখছি! সে একবারও পেছনে ফিরে তাকায়নি!
চলে যাওয়ার সময় পেছনে ফিরে তাকাতে নেই! পেছনে তাকালেই ব্যাথা বাড়ে!
স্মৃতিরা খুনি হয়ে উঠে! নিঃসঙ্গতা গ্রাস করে! চোখ ভিজে যায়!
নীলার অবাধ্য চুল উড়ে চলেছে অজানার পথে! শাড়ির আঁচল মাটি স্পর্শ করে এগিয়ে যাচ্ছে!
অনিমেষের হাতে নীলার একটা হাত, আরেকটা হাত প্রিয়ন্তির হাতে!
আমি নীলার চলে যাওয়া দেখছি! সে একবারও পেছনে ফিরে তাকায়নি!
চলে যাওয়ার সময় পেছনে ফিরে তাকাতে নেই! পেছনে তাকালেই ব্যাথা বাড়ে!
স্মৃতিরা খুনি হয়ে উঠে! নিঃসঙ্গতা গ্রাস করে! চোখ ভিজে যায়!
চারিদিকে অন্ধকার নেমে এসেছে!
ফোনের স্ক্রীনে ভেসে উঠছে দেবলীনার ছবি!
ফোনের স্ক্রীনে ভেসে উঠছে দেবলীনার ছবি!
- হ্যালো!
- হ্যা অনীল! সমুদ্র দেখা শেষ হলো? বাড়ি ফিরবে না?
Comments
Post a Comment