সেল্ফ মটিভেশন ইজ দ্যা বেস্ট মটিভেশন!
এই যে হতাসায় তুমি প্রচন্ড ভেঙে পড়ো!
অপ্রাপ্তিতে মন খারাপ করো! মানুষ হারালে ব্যথা পাও! দূরত্বে নিজের গুরুত্ব হারাও!
এসব স্বাভাবিক!
আমাদের জীবনে কিছু কমন জিনিস থাকে! মোটামুটি সবাই কিছুনা কিছু নিয়ে এক ধরনের ডিপ্রেশনে থাকে। এটা আসলে ডিপ্রেশন না! ডিপ্রেশন শব্দটার ভেতর একটা বিলাসিতা থাকে বলে, আমরা ধরে নেই আমরা ডিপ্রেশনে আছি!
যে জীবনে হতাসা নেই, না পাওয়া নেই, মন খারাপের কারন নেই, মনের অসুখ নেই, সে জীবন স্বাদহীন!
এসব আমাদের জীবনের একেকটা উপাদান। কোনটা ছাড়াই জীবনের পরিপূর্ন তৃপ্তিটা পাওয়া যায়না।
আমাদের সমস্যা হলো,
এসব অসুখকে সুখ বানানোর দায়িত্বটা আমরা অন্য কারো উপর ছেড়ে দেই।
বেঁচে থাকার মটিভেশন খুঁজি অন্য সফল মানুষদের জীবনে!
আমরা অন্য মানুষের মতো হতে চাই। অথচ, একজন মানুষ অন্য একজন মানুষের মতো কখনো হয়না।
তুমি বরং নিজের মতো হও।
নিজের মেন্টর নিজে হওয়ার চেষ্টা করো। বুকে অসুখ জমে গেলে, নিজেকে নিজে মটিভেশন দিতে শিখো!
সেল্ফ মটিভেশনের চেয়ে বড় কোন মটিভেশন পৃথিবীতে নেই।
আমার প্রধান প্রেমিকার সাথে বিচ্ছেদের ২ বছর পর একদিন হুট করে তার ফেসবুক প্রোফাইলে ঢুকে দেখলাম, কভার ফটোতে একটা কাপল ছবি দেওয়া। এটা তার বিয়ের ছবি। ছবিটা বাসর ঘরে বসে তোলা। ছেলেটা তার কাঁধের উপর হাত দিয়ে ধরে আছে!
এই স্পর্শে অধিকার মেশানো! বৈধতা মেশানো!
ছবিটা দেখে আমি কিছুক্ষনের জন্য প্রচন্ড ভেঙে পড়ছিলাম।
এই মানুষটার সাথে বিচ্ছেদের পরও আমি মনে মনে একটা সংসার সাজিয়ে রেখেছিলাম। মানুষটা একদিন ফিরবে ভেবে, আনন্দে বাঁচতে শুরু করেছিলাম!
ছবিটা দেখার পর আমি পাগলের মতো করছিলাম। বাসার সামনের দোকান থেকে দু প্যাকেট সিগারেট কিনে এনে রুমে একা বসে আছি।
একটার পর একটা সিগারেট জ্বালাচ্ছি। একটা সিগারেট খেতে আমার ৬ মিনিট সময় লাগে। টানা ৫ টা সিগারেট খেতে আমার সময় লেগেছিলো ৩০ মিনিট।
এই ৩০ মিনিটে আমি বড় হয়ে গিয়েছিলাম।
মন খারাপ করতে করতে আমি বুঝে গিয়েছিলাম, যে জিনিস হারানোর, সে জিনিস হারাবেই।
যে চলে গেছে অন্য পথে, তাকে ফেরানোর প্রয়োজন নেই।
কারো জন্যই তো জীবন থামেনা। আজ রাতে চাইলেই আমি ৪০ টা সিগারেট শেষ করতে পারি।
কাল সকালে আমাকে আমার নিজেরই টেনে নিয়ে যেতে হবে বেঁচে থাকার যুদ্ধে।
আমি সিগারেটের প্যাকেট ফেলে দিয়ে বাঁচতে শুরু করে দিলাম, নিজের জন্য!
নিজেকে নিজে বুঝালাম, এসব কোন ব্যপার না। জীবন যুদ্ধটা এমনই হয়।
তাকে পেয়ে গেলে আমি হয়তো কখনো বড় হতে পারতাম না। বুক ভর্তি একটা আবেগের স্তুপ নিয়ে বড় হওয়া যায়না।
মানুষ বড় হতে শুরু করে, অপ্রাপ্তিতে!
"একদিন সব ঠিক হয়ে যাবে" এই বিশ্বাসটা তোমাকে প্রচন্ড পরিমান ঠকাবে।
একদিন কোন কিছুই ঠিক হয়না। সবকিছুকে ঠিক করে নিতে হয়।
আর সবকিছুকে ঠিক করার দায়িত্বটা নিজেকেই নিতে হয়।
এই যে তুমি একটা ভালোবাসার মানুষের কাছ প্রত্যাশা করো, সে তোমার মন খারাপ হলে বুঝে যাবে!
যত্ন করে অসুখ সারাবে! তোমার না বলা কথা বুঝার ক্ষমতা থাকবে।
এসব প্রত্যাশা তোমাকে কষ্ট দিবে।
এই পৃথিবীতে কেউ কাউকে বুঝতে পারেনা। তোমার মন খারাপের অসুখটা সারানোর দায়িত্ব তোমার নিজেকেই নিতে হবে।
নিজেকে যে নিজে বুঝাতে পারেনা, তাকে বুঝানোর সাধ্য কারো নেই।
মাসের পর মাস ইউটিউবে মটিভেশনাল স্পিস শুনে, তোমার জীবন বদলায় না।
বদলায় তখন, যখন তুমি নিজেই নিজেকে মটিভেশন দিতে শুরু করো।
নিজ থেকে নিজের পরিবর্তনের মনোভাব না আসলে, পরিবর্তন সম্ভব না।
জীবনে তুমি যে অবস্থার মধ্য দিয়েই যাও না কেন, নিজের ভেতরের কথাটা শুনো।
ভেতর যা বলে, সেটাই সঠিক! সেটাই তোমার বেঁচে থাকার ডেফিনেশন বদলে দেবে।
নিজের জীবন বদলানোর জন্য, বেঁচে থাকার জন্য, ভালো থাকার জন্য, অন্য আরেকটা মানুষের উপর ডিপেন্ড করার মতো হাস্যকর আর কিছু নেই।
তুমি যার উপর ডিপেন্ড করে বাঁচতে চাইছো, ভালো থাকতে চাইছো, সে নিজেই হয়তো ভালো নেই।
পরনির্ভরশীল হইয়ো না। নিজের জীবনের মটিভেশনাল স্পিকার নিজেকেই হতে হয়।
এই ছোট্ট জীবনে তোমার যা কিছু প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তি তার সম্পূর্ন ক্রেডিট তোমার হোক।
কেউ যাতে মুখের সামনে এসে বলে না দেয়, আমিই ওর জীবন বদলে দিয়েছিলাম।
এই অল্প সময়ের জীবনটা নিজের শক্তিতে কাটিয়ে দিতে না পারার মতো ব্যর্থতা আর কি হতে পারে!
নিজেকে ভালোবাসো। নিজের কথা শুনো। নিজের অসুখের চিকিৎসক নিজে হও।
তোমাকে বাঁচিয়ে রাখার দায়িত্ব তোমারই। অন্য যা কিছু আছে, তারা সুসময়ে এসে অসময়ে চলে যাবে।

Comments

Popular posts from this blog