আমি ভাবি, তুমি মরে যাবে কেন?
এই যে সন্ধ্যার পাখি! একটা বারান্দা! বিষন্ন হেডফোন! আধখাওয়া কফির মগ!
নিঃসঙ্গ চেয়ার! সমরেশের বই! ব্যক্তিগত মানুষহীনতার আকাশ!
এসব রেখে মরে যাওয়া যায়?
আমি ভাবি, তুমি নিঃসঙ্গ হও কেন?
নিজের সাথে নিজে থাকলেও নিঃসঙ্গ হওয়া যায়? অথবা, আয়নার মানুষ! বার্ধক্য বয়ে বেরানো স্মৃতি! পরিচিত বালিশ! আপন ঘর! ঘরের দুয়ার! রাত দুটা বাজে বাশিতে ফুঁ দিয়ে হেটে যাওয়া গলির প্রহরী!
এরা থাকতেও মানুষ নিঃসঙ্গ হয়?
একসময় আমার একটা ছোট্ট স্বপ্ন ছিল!
একটা ছিমছাম দোতালা ঘর! বারান্দায় কাঠগোলাপ!
থমথমে নীল আকাশ ! খুব কাছেই একটা সমুদ্র !
মাঝরাতে জানালার ফাঁকে এসে আটকে যাওয়া সমুদ্রের ঢেউ!
ভীষন মন খারাপ ! একটা ব্যক্তিগত মানুষ ! এক জোড়া নির্লিপ্ত চোখ! কোমল হাত! হাতের আঙুল!
নির্ভরশীলতার কাঁধ! হালকা শব্দে ভেসে আসা রবীন্দ্রনাথ!
ওসব স্বপ্ন এখন নেই! নেই বলেও তো বেঁচে থাকা যায়! নিঃসঙ্গতার প্রতি মায়া জন্মায়!
ঘর বন্ধ করে দিলেই একটা নিজস্ব পৃথিবী হয়! বাইরে কোলাহল! ভেতরে পিনপতন নিরবতা!
আহা, জীবন!
মৃত্যু একটা বিলাসিতা!
আমার মাঝে মাঝে মরে যেতে ইচ্ছে হয়!
এই তো একটা জীবন! হুট করে শেষ হয়ে যায়!
আমি ভাবি, আমি নেই!
আমার পড়ার টেবিল! এলোমেলো বই! ধূলো জমা কালবেলা!
প্যাচানো হেডফোন! মানিব্যাগে লুকানো একটা হলুদ চিরকুট!
সব কেমন পরে রবে অযত্নে!
আমার বাঁচতে ইচ্ছে হয় নিজের জন্য! আমার মন খারাপ হয়, মৃত্যু কাছে আসলে আর পড়ে শেষ করা হবেনা, অর্ধেক বাকি থাকা " ট্রেন টু পাকিস্তান"!
আহারে,
আমার নিজের জন্য আমার বড্ড মায়া হয়!

Comments

Popular posts from this blog